সংবাদচর্চা রিপোর্ট
স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেছেন, বিশ্বে বহু রাজনৈতিক হত্যাকান্ড হয়েছে। কোন হত্যাকান্ডে অবুঝ শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ছিলো না। বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যাকান্ড বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবমানবিক হত্যাকান্ড। খুনিরা সেদিন শিশু রাসেলকে পর্যন্ত রক্ষা করেনি। রক্ষা করেনি যুব লীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে। ঘাতকরা বুঝতে পেরেছিলো জাতির পিতার পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্য বাঙালিদের অতি আপনজন ছিলেন । বাংলাদেশকে মিনিপাকিস্থান বানানোর জন্য তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। খুনিরা সেদিন শুধু ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, খুনিরা বাংলাদেশের আত্মাকে হত্যা করে । বাংলাদেশকে পাকিস্তানপন্থার দিকে ঠেলে দেয়।
রবিবার ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদে দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বের শোষিত মানুষের মুক্তির কন্ঠস্বর । ‘আমরা যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি সেই পাকিস্তানিদের হাতে বঙ্গবন্ধু মারা যাননি, তিনি মারা গেলেন আমাদের বাঙালিদের হাতে। কত বড় অকৃতজ্ঞ আমরা! আমরা জাতির পিতাকে নিজেরা হত্যা করেছি। এটা একটা করুণ ইতিহাস।’
মন্ত্রী বলেন, খুনি মোশতাক জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। তাদের বিচার হওয়া দরকার। মন্ত্রী সরকারের কাছে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দ্রুত ফিরে এনে রায় কার্যকর করার বিচার দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের সাথে রাজনৈতিক ব্যক্তি সাবেক আমলা জড়িত। গুটি কয়েক বিপদগামী সেনা সদস্য বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত এটা মিথ্যা কথা। সকলবাহিনীর সদস্যরা সেদিন দেশ প্রেমের পরিচয় দিলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারত না। খুনিদের বিচার বন্ধ করতে তৎকালীন সরকার ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলো। শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহেনাকে দেশে আসতে দিতে চায়নি।
গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। তিনি সমগ্র বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য বছরের পর বছর কারাবরণ করেছেন । ২৪ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছেন। তারপর তিনি আমাদের স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এখন আমাদের উন্নয়নের প্রতীক। বঙ্গবন্ধুর রক্ত বৃথা যাবে না। বঙ্গবন্ধু ক্ষুদা দারিদ্র্য মুক্ত সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা নির্মাণের জন্য যে স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটা স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করেন গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, যতদিন বাঙালি জাতি আছে, ততদিন বঙ্গবন্ধু সবার হৃদয়ে বেচে থাকবেন। তিনি বাঙালিদের চেতনার প্রতীক। তার মৃত্যু নেই। তিনি মহামানব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহজাহান ভুঁইয়া, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান, ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদ ভুঁইয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব তাবিবুল কাদির তমাল, রূপগঞ্জ থানার ওসি সায়েদ, সহকারী কমিশনার আতিকুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পরে অতিথিবৃন্দ চেক ও পুরস্কার বিতরণ করেন।